সোমবার, ২০ জুলাই, ২০২০

আবার জঙ্গলমহলে নাশকতার নীল-নকশা করেছিলো মাওবাদীরা

মাওবাদীদের প্রতিকি ছবি 

নিজস্ব সংবাদ-দাতা:  
প্রথমে আসবে ছদ্মবেশে ‘রেইকি’। পরে সুযোগ আসলে করবো হামলা। মহিলা স্কোয়াডকে সামনে রেখে এই প্ল্যানেই আবার জঙ্গলমহলে নাশকতার নীল-নকশা করেছিলো মাওবাদীরা। নেপথ্যে থাকা মাওবাদীদের প্রাক্তন রাজ্য কমিটির একমাত্র জীবিত সদস্য আকাশ ওরফে অসীম মণ্ডল। এবারে তাদের টার্গেট পুরুলিয়া জেলা। পুলিস-প্রশাসন, বনবিভাগীয় কর্মীদের পাশাপাশি রেললাইন তুলে ফেলা, মালবাহী ট্রেন এর ক্ষতি কিংবা সরকারি অফিসে হতে পারে বিস্ফোরন হামলা। নিরাপত্তা কর্মীদের কাছ থেকে অস্ত্র লুট করে জঙ্গলমহলে আবারও ভয়ের পরিবেশ নিয়ে আসতে চলেছে মাওবাদীরা। আর এই কাজে ঝাড়খণ্ডকে মূল কেন্দ্র ভূমি বানিয়েছে মাওবাদীরা। কিছু দিন ধরেই ঝাড়খণ্ড ও পুরুলিয়া জেলা সীমান্তে এই মহিলা স্কোয়াডের গতিবিধি নজরে এসেছে জেলা পুলিস ও গোয়েন্দা অফিসারদের চোখে। তার পরিপ্রেক্ষিতে সীমানা লাগোয়া পুরুলিয়ার থানাগুলিকে খুব সতর্ক করেছে।
কিষেণজির সঙ্গী মাওবাদী মহিলা স্কোয়াডের বেশিরভাগ সদস্য হয় মারা গিয়েছে, না হলে মূলস্রোতে ফিরে এসেছে।  ২০১২ সালে সুচিত্রা মাহাত আত্মসমর্পণ করার পর স্কোয়াডের দায়িত্ব পান তারা। সেও ২০১৬ সালে এসটিএফের হাতে ধরা পড়ে যায়। তারপর শীর্ষ নেতা আকাশের পুরুলিয়ার বাহিনীতে বেলপাহাড়ীর নেত্রী জবা মাহাত থাকলেও, জঙ্গলমহলে মহিলা স্কোয়াডের আর কোনও অস্তিত্ব ছিল না। ধরপাকড়ের হাত থেকে বাঁচতে বেশ কিছু মাও নেতা ঝাড়খণ্ডে পালিয়ে যায়। সেখানেই ফের এরাজ্যে মহিলা বাহিনীকে আবার সক্রিয় করার চেষ্টা শুরু হয়।
অফিসাররা জানতে পেরেছেন, জঙ্গলমহলের বাসিন্দা কিছু মহিলাকে নতুন করে দলে নিয়েছে মাওবাদীরা। পাশাপাশি সক্রিয় হয়ে উঠেছে ভিন রাজ্যে গা ঢাকা দিয়ে থাকা স্কোয়াডের সদস্যরা।  ঝাড়খণ্ড ও পুরুলিয়া সীমান্তে মহিলা বাহিনীর আনাগোনা বেড়েছে। প্রায়শই মিটিং হচ্ছে। কয়েকদিন আগে ঝাড়খণ্ডের কুলহাল থানা এলাকার চাইবাসাতে আইইডি বিস্ফোরণে ফরেস্ট গার্ডের অফিস উড়িয়ে দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, এই হামলা চালিয়েছে মাওবাদীদের এই মহিলা স্কোয়াড।
সূত্রের খবর, মহিলাদের দু’টি স্কোয়াড তৈরি হয়েছে। যার একটিতে ১৫ এবং অন্যটিতে ১৩ জন সদস্য রয়েছে। তাদের ব্যাক আপ দেওয়ার জন্য পুরুষ স্কোয়াডের সদস্যরা তো আছেই। প্রথম দলটি আত্মগোপন করে রয়েছে পূর্ব সিংভূমের সাতকেটার জঙ্গলে। যেখান থেকে একদা মাওবাদীদের ঘাঁটি বান্দোয়ানের দূরত্ব মাত্র ১২ কিলোমিটার। অন্য দলটির অবস্থান বাঘমুণ্ডি থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে, ঝাড়খণ্ডের সরাইকেলার পন্নদাম জঙ্গলে। এই দু’টি জায়গা দিয়ে আবার মহিলা স্কোয়াডের আনাগোনা শুরুর খবরে উদ্বেগ বেড়েছে পুলিস মহলে। শীর্ষ কর্তারা জানতে পেরেছেন, ঘাটশিলা থেকে অপারেশনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে আরও একটি স্কোয়াড।  তার সদস্য সংখ্যা জানার চেষ্টা হচ্ছে।  গ্রামবাসীদের মধ্যে তারা প্রচার শুরু করেছে বলেও খবর। গোটা এলাকায় মাওবাদী করিডর তৈরিই তাদের লক্ষ্য।

Share This

0 Comments: