রবিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০

লাল সবুজের মানচিত্রে ঐতিহ্যের প্রকৃত দেশপ্রেম ও বীরত্ব গাঁথাকে সালাম

লাল সবুজের মানচিত্রে ঐতিহ্যের প্রকৃত দেশপ্রেম ও বীরত্ব গাঁথাকে সালাম
চিত্রঃ ঐতিহ্যের লাল সবুজের মানচিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদনঃ পৃথিবীর মানচিত্রে নিশ্চিহ্ন ক্ষুদ্র বালিরসম এই বাংলা প্রকৃতির এক লীলা ক্ষেতের চিত্র পৃথিবীকে দিয়েছে উপহার। আর বিশ্ব পেয়েছে মনভোলানো খোদার সৃজিত দৃশ্য। ছিলো যত পথ-ঘাট, ফসলের মাঠ পূর্ণ ছিলো অপ্রকাশ্য সৌন্দর্যে। গোলাভরা ধান; গোয়ালভরা গরু মাঠে সোনালী ফসল, সবুজের সমারোহ নদীর কলরব পৃথিবীকে দিয়েছে নাড়া ছুটে এসেছে এদেশে শতো শতো নাবিক। প্রকৃতির দানে ভরপুর এই দেশে ভ্রমণে আসা আর্য্য, পাল, মোঘল, সেনরা এখানেবাস করছিল; প্রতিষ্ঠা করছিলো আধিপত্য, হয়েছিল রাজা বাকিসব প্রজা। তারাই শাসক ছিলো এই বাংলার।

seobipradip das tribeni
ছবিতে ক্লিক করে আগামী ক্লাসের জন্য ৭৯.০০ টাকা পেমেন্ট করে ভর্তি হন 

বারো শতকে বখতিয়ার খলজি এই বাংলায় শাসন শুরু করছিলো। মোঘল আমলে বীর নবাব আলিবর্দী খান ও  দেশপ্রেমি নবাব সিরাজউদ্দৌলা  বংশের নবাবী কাজ শুরু আর এই ভূখণ্ড ফিরে পায় স্বর্ণযুগ, ন্যায় শাসন। বাংলার মসনদে বসে বীর নবাব আলিবর্দী খান ও  দেশপ্রেমি নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরিবার দিয়েছিলো শান্তশিষ্ট এক অতুলনীয় বন্ধুত্ব পূর্ণ শাসন বেবস্থা। বাংলাকে ভালোবেসে প্রজার মুক্তির জন্য কুচক্রী বর্গী, ইংরেজ ও বাংলার শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিলেন নবাব আলিবর্দী খাঁ। ১৭৫৬ সনে মৃত্যুর আগ মুহূর্তে নবাব আলিবর্দী খান সিংহাসনের শাসনক্ষমতা অর্পন করেন বীরযোদ্ধা, ন্যায় ও সততার প্রতীক বাংলার যুবরাজ সিরাজউদ্দৌলার হাতে। বাংলার দেশপ্রেমী সকল প্রজারা খুশি, তবে খুশি ছিলনা বাংলার দুষমনেরা আর ব্রিটিশ ইংরেজেরা। রাজদরবারের অবাধ্য কুচক্রী মহলে ইংরেজ সুকৌশলে রাজদরবারে প্রবেশ করে অতপর নবাবের পতনে ষড়যন্ত্রমুলক যুদ্ধ ঘোষণা। পবিত্র কুরআন ও নিজ নিজ ধর্মের গ্রন্থ স্পর্শ করে প্রতিজ্ঞা করেও তারা রাখেনি কথা। করেছে বেইমানি স্বদেশের সাথে নিজ বাংলা মায়ের সাথে, বাংলার দেশপ্রেমীদের সাথে। কলঙ্কের দাগ লাগালো নিজ দেহে জাফর- ঘষেটি- বেগ , দুর্লব-বল্লব-শেঠ- চন্দ্ররা,  আর নবাবের পাশে মিরমর্দান, মোহনলাল, সিনফ্রে বীরদর্পে সবসময়। পলাশীর প্রান্তরে বিশ্বাসঘাকতার ফলস্বরূপ কম সৈন্য আর অস্ত্র নিয়ে বিনাযুদ্ধে নবাব বাহিনীর উপর হামলা- বাংলার উপর হামলা।


দুর্লব-বল্লব-শেঠ- চন্দ্রদের যোগসাজসে জাফরের মিথ্যা প্রচারণা মূলক ঘোষণায় বিজয়ের মুখে যুদ্ধ স্থগিত অতপর অতর্কিত হামলা করে কাপুরুষ। বিশ্বস্ত মিরমর্দান, মোহনলাল, সিনফ্রে রক্ত দিয়েছিলো বাংলার রবি রক্ষা করতে তবুও পারে নাই। অস্ত গেলো বাংলার সূর্য ডুবে গেল, সিরাজের প্রাণ প্রিয় বাংলা শোষকের গোলায়। অবশেষে লাল সবুজেরবাংলার সম্পদ পাঁচার করতে শুরু করছিলো নিঃস্ব হলো সিরাজের ভালোবাসার লাল সবুজের বাংলা।

চতুর দুর্লব-বল্লব-শেঠ- চন্দ্রদের বুদ্ধিতে বোকা লোভী মীরজাফর- মিরন ও ব্রিটিশ ইংরেজরা এদেশের মাটিতে লাগিয়েছে কলঙ্ক!! কৃষকের আঙ্গুল কেটে মসলিন চাষ বন্ধ করে, পাট-ধান চাষের পরিবর্তে নীল চাষে বাধ্য করা হয়! কূটনীতিক প্রয়োগ করে ভূমিহীন করছিলো সোনার দেশের কৃষককে, অত্যাচারে রক্তাক্ত করছিলো সিরাজের প্রিয় জন্মভুমির প্রতিটি দেশপ্রেমী মানুষকে। দানবেরা প্রায় দু'শ বছর শাসন করছিলো, দেশপ্রেমীদের সংগ্রামে আন্দলনে পিছু হটল আর খালি মাঠে অন্য সব অত্যাচারীদের  হাতে দিয়ে গেলো! শুরু হলো হিন্দ পাকের দানব রূপী শোষণের আরেক তাণ্ডব লীলা। আঘাত হানে ভাষার উপর। রাজপথ রঞ্জিত করছিলো তারা বাংলার দামাল ছেলের রক্তে। ফিরিয়ে আনলো রাষ্ট্রভাষা বাংলা।

বাঙ্গালি বুঝছিলো এরা শাসনের নামে শোষণ চালাচ্ছে বলে এক হলো বাঙ্গালি। ৫২' ভাষা আন্দোলন, ৬২ ছাত্র আন্দোলন ৬৬ এর ৬ দফা; ৬৯ গণঅভ্যুত্থান, ৭০ এর নির্বাচনে জয় লাভ করে বাঙ্গালি প্রমাণ করেছিলো তারা স্বাধীনতা চায়। খান আতার  দেশপ্রেমি সিরজকে নিয়ে তৈরিকৃত পূর্ণ দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র “নবাব সিরাজউদ্দৌলা”-র মাধ্যমে নবাব চরিত্রে অভিনয়কারী অভিনেতা আনোয়ার হোসেনের বজ্রকণ্ঠ সাড়ায়  সাড়া দিলো সবাই, উজ্জিবিত হলো লাল সবুজের বাংলা- জেগে উঠলো জনতা, অভিনেতা আনোয়ার হোসেনের মাঝে পেলো নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে, আর বলে উঠলো সবাই- এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। নবাব সিরাজউদ্দৌলা চলচ্চিত্রের মহাধ্বনীতে শুরু হলো যুদ্ধ, ৯মাস রক্তক্ষয়ী লড়াই, এক সাগর রক্তে ভেসে আসলো- "জয় বাংলা, জয় সিরাজউদ্দৌলা" প্রতিধ্বনি, আর এই প্রতিধ্বনিতে।

Published on:

13/12/2020 21:31

Published By: BIPRADIP DAS (Editor/Publisher's)


Share This

0 Comments: