বুধবার, ৩০ জুন, ২০২১

মৃত্যু শয্যায় দাদা | পাশে বসে বোন আদর করে দিচ্ছে

মৃত্যু শয্যায় দাদা | পাশে বসে বোন আদর করে দিচ্ছে
নিজস্ব চিত্র- 

বিশ্বজিৎ মন্ডল, মালদাঃ মৃত্যু শয্যায় একমাত্র স্নেহের দাদা পারভেজ আলি(৭)।পাশে বসে বন আদর করছে একমাত্র বোন আয়েশা খাতুন (৫)।আবার মায়ের সঙ্গে দাদাকে স্নান করিয়েও দিচ্ছে বোন।তাকে ঘিরে রয়েছে পাড়ার খেলার বন্ধুরা।সকলের মুখে করুনার ছাপ। বন্ধুদের সাথে খেলার ইচ্ছা থাকলেও উঠে দাঁড়ানোর মতো শরীরে বল নেই পারভেজের।তাই একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কোন উপায় নেই তার।

জানা যায় দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে জটিল ‌রোগে আক্রান্ত হয়ে বিছানায় শয্যাসায়ী হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মহেন্দ্রপুর গ্রামের‌ স্থানীয় বাসিন্দা হতদরিদ্র দিনমজুর সাজ্জাদ আলির একমাত্র সন্তান পারভেজ আলি(৭)।জন্মের তিন বছর পর সুস্থ ও স্বাভাবিক শিশুর মতো জীবন কাটছিল পারভেজের।দিল্লিতে মা-বাবার সঙ্গে থাকার সময় জ্বর হলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। তারপর শরীর অসাড় হয়ে যায়। এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন সে।

Digital Bandhan

বাবা সাজ্জাদ আলি পেশায় একজন পরিযায়ী শ্রমিক। বর্তমানে লকডাউনে কাজ হারিয়ে দুই বছর ধরে বাড়িতে বসে রয়েছে।মাঝে মধ্যে দিনমজুরের কাজ জুটলেও তা দিয়ে চিকিৎসা করানো তো দূরের কথা সাংসারিক খরচ জোটাতে হিমসিম খাচ্ছে পরিবার।তাই ছেলের চিকিৎসার জন্য অর্থ জোগাড় করতে দিশেহারা পরিবার।অর্থাভাবে থমকে গিয়েছে ছেলের চিকিৎসা।মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কাতর আবেদন করেছে বাবা। কিন্তু এই সংকটময় পরিস্থিতিতেও জীবনের সর্বস্ব দিয়ে ছেলের চিকিৎসা করিয়ে আসছে পারভেজ আলির‌ বাবা সাজ্জাদ আলি।তবে বিশ্বজুড়ে করোনার এই পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে সাজ্জাদবাবু।আর এতেই থমকে গিয়েছে ছেলের চিকিৎসা।বর্তমানে ছেলের চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে না পেরে দুচিন্তায় রয়েছে পরিবার। পারভেজ আলির বাবা সাজ্জাদ আলি জানান তার এক ছেলে ও এক মেয়ে এবং স্বামী-স্ত্রী সহ মোট চারজনের অভাবের পরিবার।পারভেজ বয়সে বড়ো।সপরিবারে দিল্লিতে থাকার সময় ছেলে। 

হটাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে ধীরে ধীরে হাত-পা ও কোমর অসাড় হয়ে যায়।তারপর ধীরে ধীরে বাকশক্তি ও শ্রবণ শক্তি হারিয়ে ফেলে।দিল্লিতে চিকিৎসা করালেও ছেলেকে সুস্থ করতে পারেনি। ছেলের চিকিৎসায় সঞ্চিত অর্থ শেষ হয়ে গেছে। এখন বাড়িতে বসে অসহায়ভাবে দিন কাটছে।স্বাথ্য সাথী কার্ড‌ থাকলেও কোথায় নিয়ে গেলে মিলবে বিনামূল্যে চিকিৎসা তা তারা কিছুই জানে না।ধার দেনা করে এলাকার বেসরকারি নার্সিং হোমে ছেলের চিকিৎসা করালেও এখন টাকার অভাবে থমকে রয়েছে চিকিৎসা।ছেলের প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট হলেও মিলছে না ভাতা। অপর দিকে পারভেজ আলির মা পারভিন বিবি।

জানান ছেলে হাঁটাচলা করতেই পারে না। সবসময় বিছানায় শুয়ে থাকে। হাত-পা ও কোমর নিথর হয়ে পড়েছে।দিনের পর দিন হাত-পা শোরু হয়ে যাচ্ছে।যতই দিন গড়াচ্ছে ততই এক পা করে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।ছেলে মাঝেমধ্যে চমকে উঠছে। ডাক্তারবাবুরা দ্রুত চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছেন।খরচ হবে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা। কোথায় পাবো এতো টাকা ? চিন্তায় উড়েছে ঘুম।এখন সরকারি সাহায্যের আশায় কাটছে দিন।

  • Published on:
  • 30/06/2021 18:40
  • Published By: BIPRADIP DAS (Editor) 


Share This

0 Comments: