চিত্র: স্ত্রী বিজলী খাতুন ধর্নায় বসেছে |
বিশ্বজিৎ মন্ডল: স্বামী পরকীয়ায় মত্ত,ব্যস্ত মোবাইলে!প্রতিবাদ করতে গিয়েই ঘরছাড়া স্ত্রী।শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েও দমে না গিয়ে সুবিচারের দাবিতে শ্বশুরবাড়ির উঠানে ধর্নায় বসে রয়েছেন দুই সন্তানের মা বিজলী খাতুন (২৬)।রবিবার সন্ধ্যা থেকে ধর্নায় বসে আছেন তিনি। রাত গড়িয়ে সকাল এবং সকাল গড়িয়ে দুপুর। এখনো পর্যন্ত তার কেউ খোঁজ নেইনি।অনাহারে বসে রয়েছেন তিনি।বাড়িতে ঢুকতে না দিলে শ্বশুর বাড়িতেই আত্মহত্যা করে মারা যাবেন বলে জানান বিজলী খাতুন।স্বামী সাহাবাজ আলি ও শ্বাশুড়ী আসিরা বিবি বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে রবিবার সন্ধ্যা থেকে পালাতক রয়েছেন।ঘটনাটি ঘটেছে হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের হুসেনপুর গ্রামে।এই নিয়ে হুসেনপুর এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
স্ত্রী বিজলী খাতুনের অভিযোগ, প্রায় দশ বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়।বিয়ের কিছুদিন তাদের মধ্যে সম্পর্ক ভালো ছিল।তাদের দুই নাবালক সন্তানও রয়েছে।কিন্তু তারপর থেকে তার স্বামী ও শ্বাশুড়ী মোটা অঙ্কের যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যাচার করতে শুরু করেন।অত্যাচার সহ্য করেও তিনি দুই সন্তানের মুখ দেখে সংসার করে যাচ্ছিলেন। এরপর স্বামী রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের চন্ডীপুর গ্রামের এক বিবাহিত মেয়ের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ স্ত্রীর।সবসময় মোবাইলে ব্যস্ত থাকেন।প্রতিবাদ করতে গেলেই বেধরক মারধর করেন তাকে।এই নিয়ে গ্রামে বেশ কয়েকবার সালিশি সভাও বসে।কিন্তু ছেলে নাছোড়বান্দা।
দ্বিতীয় বিয়ে করার আশায় দুই মাস আগে তাকে জোর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। তারপর থেকে আর তাকে বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না।রবিবার সকালে গ্রামে সালিশি সভা বসার কথা থাকলেও স্বামী ও শ্বাশুড়ী সালিশি সভায় উপস্থিত না হয়ে বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যায় বলে খবর।এমনকি স্বামী স্ত্রীর নামে থানায় মিথ্যা নিখোঁজ ডায়েরি করেন করে রেখেছেন।তারই প্রতিবাদে সুবিচারের দাবিতে শ্বশুরবাড়িতে ধর্নায় বসে রয়েছেন তিনি।
বিজলী খাতুনের মা জানান,বিয়ের সময় সমস্ত যৌতুক মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে।তা সত্ত্বেও যৌতুকের জন্য তার মেয়েকে মারধর করছে।তারা গরীব মানুষ কোথায় পাবে এত টাকা। আবার চন্ডীপুর গ্রামে এক বিবাহিত মেয়ের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন জামাই।সেই থেকে তার মেয়েকে দেখতে পারেন না।বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। রবিবার সকালে গ্রামে সালিশি সভা বসার কথা ছিল। কিন্তু সালিশি সভায় উপস্থিত না হয়ে ঘরে তালা ঝুলিয়ে তারা পালিয়ে যায়। কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য অলক পোদ্দার জানান, ছেলেটি চরিত্রহীন,চন্ডীপুর গ্রামে এক মেয়ের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে।আবার মোটা অঙ্কের যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে প্রায়শই মারধর করে।
এই নিয়ে গ্রামে বেশ কয়েকবার সালিশি সভা বসেছে।ছেলে স্ত্রীকে নিতে অস্বীকার করছে। মেয়েটি রবিবার সন্ধ্যা থেকে ধর্নায় বসে রয়েছেন। এই নিয়ে প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। প্রশাসন বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। অভিযুক্ত স্বামী সাহাবাজ আলির সঙ্গে আমাদের প্রতিনিধি মোবাইল ফোন মারফত যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে এই ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে বারে বারে ফোন কেটে দেই বলে অভিযোগ।
Published By: BIPRADIP DAS
0 Comments: